ছোটোবেলা থেকেই মাকে যতটা না কাছে পেয়েছি, দিদাকে অনেক বেশি পেয়েছি। যখন খুব ছোটো ছিলাম, মায়ের কাছে বকা খেলেই দিদার কাছে ছুটে চলে যেতাম কিংবা দিদা বকা খাওয়ার হাত থেকে বাঁচিয়েছে। তারপর যখন দিদার হাতে মাখা কয়েদ বেল মাখা কিংবা কুলের আচার লুকিয়ে লুকিয়ে আমাকই খেতে দিত।তারপর জন্মদিনের দিন যখন সবাই হরেকরকম উপহার দিত, আমি সবার মধ্যে দিদার হাতে বানানো বিখ্যাত মাটন কষাটাই খুঁজতাম। তারপর যখন একটু বড় হলাম, প্রেমে পড়লাম, তখনও সেই দিদাকে এসেই তার কথা বলেছিলাম। যখন রাতের পর রাত জেগে পরীক্ষার পড়া পড়তাম, দিদাও জেগে বসে থাকত। যখন কলেজে ভিষণ চাপের মধ্য দিয়ে সময় কাটত, বাড়ি আসলে দিদাই মাথা টিপে দিত। যখন খুব মন খারাপ হত দিদার কোলে শুয়ে গল্প শুনতাম। আমার জীবনে আমার দিদার ভুমিকা ছিল অনবদ্য। যেটা আমি কোনো ঋণ দিয়ে শোধ করতে পারব না। আজ দিদা আর নেই কিন্তুু আমি মনে করি দিদা আমার প্রতিটা পথ চলার সাথী।আজকের দিনেও দিদাকে আমি আমার ছায়া বলেই মনে করি। দিদার জায়গাটা কেউ কোনোদিন নিতে পারবে না। এখন কানে বাজে “কি রে সোনা মা উঠে পড়, আবার তো আরকেটা নতুন যুদ্ধ শুরু হবার দিন।” আমি দিদার কথাটাই মেনে চলি প্রতি দিনের সূর্য ওঠার সাথে সাথে আমাদের জীবনে একটা নতুন লড়াই শুরু হয়। দিদা হয়ত আমায় জন্ম দেয়নি কিন্তুু দিদার মতো অতোটা আগলে কেউ রাখতে পারবে না। আমার একটুও যদি মন খারাপ হয় সেই খেয়ালটুকও দিদা ছাড়া কারওর বোঝার ক্ষমতা নেই। দিদার স্নেহটা আলাদাই একটা মর্মস্পস্পর্শী।
দিদার_স্নেহ
লেখায় : অয়ন্তিকা
এডিট : সায়নী